এই সেই পৃথিবী বিখ্যাত বিশাল মিউজিয়াম যেখানে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে একবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিল্প, শ্রেষ্ঠ ভাস্কর্য সযত্নে সংরক্ষিত, প্রদর্শিত। যার গায়ে গায়ে জড়ানো ঐতিহাসিক প্রলেপ, ফ্রান্সের রাজা রানীর যুগের রাজকীয় ছাপ, সুক্ষ কারুকাজ – আর সেই মিউজিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে আমি? যার কথা বহু আগে থেকে শুনে এসেছি হঠাৎ সেই আশ্চর্যের সামনে দাঁড়িয়ে বিস্ময়ে বিহ্বল হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
সত্যিকারের আর্ট প্রেমীদের ল্যুভ মিউজিয়ামের প্রতিটি শিল্প সংগ্রহ দেখে বুঝে নিতে নাকি এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে। তাই, ল্যুভ মিউজিয়ামের ভেতরেরও ম্যাপ আছে – বিশেষ শিল্প, বিখ্যাত ভাস্কর্যের এক গাইড দেওয়া থাকে। ভেতরে চারটে তলা আছে – আর সেই চার তলার চার রকমের বিন্যাস। যে কোন তলায় কোথায় কোন আর্ট আছে তা হঠাৎ করে ঢুকেই কোন ভাবেই আঁচ করা যায় না। আর্টের ভিড়ে রীতিমত হারিয়ে যাওয়া খুব আশ্চর্যের কিছু না।
এর প্রতিটি কোণায় কোণায় আছে এক এক সময়ের গল্প। আসলে ১২ শতাব্দীতে এই মিউজিয়াম ফ্রান্সের রাজা Philip II এর দুর্গ রাজ প্রাসাদ ছিল। আজকের এই ল্যুভ যুগ যুগ ধরে নানা ভাবে গড়ে উঠে আরও বিশাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরে ১৭ শতাব্দীতে ফ্রান্সের রাজা Louis চোদ্দ নিজের রাজপ্রাসাদ Versailles এ নিয়ে যান ও এই ল্যুভ কে নিজস্ব রাজকীয় সংগ্রহ প্রদর্শনীর জন্যে রেখে দেন।
পরে ফরাসী বিপ্লবের সময় ল্যুভকে ফ্রান্সের প্রধান শিল্প সম্পদ প্রদর্শনীর জন্যে মিউজিয়াম তৈরি করার ঘোষণা করা হয়। এর বেশীর ভাগ শিল্প সামগ্রীই তখন ছিল রাজকীয় আর চার্চ থেকে বাজেয়াপ্ত করা শিল্প। পরে, নেপোলিয়ানের সময়ে, নেপোলিয়ানের লুট করা শিল্পে ল্যুভরের শিল্প সংগ্রহ আরও বেড়ে ওঠে। এমনকি, তখন ল্যুভ মিউজিয়ামকে নেপোলিয়ান মিউজিয়ামও বলা হয়েছিল।
কিন্তু, নেপোলিয়ান ওয়াটারলু যুদ্ধে হেরে গেলে, কেড়ে নেওয়া, লুট করা অনেক শিল্প সংগ্রহ আসল মালিককে ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল। আবার সেই সময়ে ল্যুভরের অনেক কর্মীরাও নিজেদের সংগ্রহে অনেক মূল্যবান শিল্প রেখেছিল। পরে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ল্যুভরের শিল্প সংগ্রহ বেড়েই চলেছে। ল্যুভরের ছাদের নীচে স্থান পেয়েছে ইজিপ্সিয়ান, গ্রিক, ইতালিয়ান, রোমান, ইসলাম ইতিহাসের শিল্প সামগ্রী।
ল্যুভ চত্বরে চারিদিকে ঐতিহাসিক স্থাপত্যের মাঝে জ্বল জ্বল করে এক অত্যাধুনিক স্থাপত্য – কাঁচের এক বড় পিরামিড, সেই বড় পিরামিড ঘিরে আবার তিনটে ছোট ছোট পিরামিড। আসলে বড় পিরামিডই ল্যুভ মিউজিয়ামে ঢোকার রাস্তা। মিউজিয়ামে ঢোকার পুরনো রাস্তাটি যখন প্রচুর টুরিস্টের অত্যাধিক আসা যাওয়ার ফলে নষ্ট হতে শুরু করে, এই আধুনিক দরজাটি তৈরি হয়।
প্যারিসিয়ানরা অনেকেই তখন ঘোর আপত্তি করেছিল। মধ্য যুগীয় স্থাপত্যের মাঝে আধুনিক স্থাপত্যকে স্থান দেওয়া কতটা যুক্তি সঙ্গত, সেই নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছিল, কিন্তু, পরে সময়ের সঙ্গে দেখা যায় এই আধুনিক ও পুরাতন স্থাপত্যের সমন্বয় ল্যুভ ও প্যারিসের এক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। নতুনকে যথা যোগ্য মর্যাদা দিয়ে বরণ করে নেওয়াই তো পুরাতনের কাজ বা দায়িত্ব। আর সেই দায়িত্ব খুবই আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করছে দিনের উজ্জ্বল ও রাতের আলোকিত ল্যুভ।
It’s one place where there is never enough time. So much to see and discover. Beautiful!
Yes, indeed, really beautiful. Thanks.
Superb post.Cheers
The pictures are delightful.Couple years ago we visited Europe.Astonishing cities.Have a wonderful weekend.Jalal
Thank you. I am happy to know that you liked the pictures and it revived the memories of your Europe visit.