তুলুসে রবিবারের দুপুরে চ্যাটার্জি অ্যান্টির রামোন ভিলের আরামদায়ক বসার ঘরে বসে বিশাল টিভি স্ক্রিনে সিনেমা দেখা ও অ্যান্টির মুখে নানা দেশের ঐতিহাসিক গল্প শোনা আমাদের অন্যতম বিনোদন। অ্যান্টির পড়ার ঘরে দেশবিদেশের প্রচুর সিনেমার সম্ভার থরে থরে সাজানো। কফির কাপ হাতে তুলে দিতে দিতে অ্যান্টি বললেন – আজ তোমরা Raid on Entebbe দেখো, সত্যি ঘটনার উপরে তৈরি এই সিনেমা।
Raid on Entebbe (1977)
ইস্রায়েলের তেল আবিব থেকে Air France এর Airbus A300 প্রায় আড়াইশো জন যাত্রী নিয়ে উড়ে গ্রিসের এথেন্সে থেমে প্যারিসের দিকে যাচ্ছিল। আকাশ পথে দু’জন প্যালেস্থাইন ও দু’জন ওয়েস্ট জার্মান সন্ত্রাসবাদী এরোপ্লেনটিকে হাই-জ্যাক করে নেয়। হাই-জ্যাক করার পর এরোপ্লেনটিকে হাইজ্যাকাররা প্রায় ছয় ঘণ্টা উড়িয়ে লিবিয়ায় নামিয়ে তেল ভরে আবার উড়তে শুরু করে। অবশেষে উগান্ডার Entebbe এয়ারপোর্টে থেমে যাত্রীদেরও নামায়।
সেখানে প্যালেস্থাইনী সন্ত্রাস বাদীরা সেই সময়ের উগান্ডার কুখ্যাত প্রেসিডেন্ট ইদি আমীনের সম্পূর্ণ সামরিক সাহায্য পায়। এমনকি ইদি আমীন ইস্রায়েলের সঙ্গে প্যালেস্থাইনী সন্ত্রাস বাদীদের জন্যে মধ্যস্থতাও করে। প্যালেস্থাইনী সন্ত্রাস বাদীদের দাবি এই এরোপ্লেনের যাত্রীদের প্রানের বিনিময়ে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইস্রায়েলের জেলে যে সমস্ত প্যালেস্থাইনী সন্ত্রাস বাদীরা বন্দী আছে তাঁদের মুক্তি, বিশেষ করে ইস্রায়েলের জেলে যারা আছে তাঁদের মুক্তি।
তাই সন্ত্রাসবাদীরা অন্যদের ছেড়ে দিয়ে শুধু মাত্র ইস্রায়েলী, জিউসদের hostage করে রাখে। hostage দের মধ্যে অবশ্য ফ্রেঞ্চ পাইলট ক্যাপ্টেন Michel Bacos ছিলেন। সন্ত্রাসবাদীরা ক্যাপ্টেনকে ছেড়ে দিলেও তিনি যেতে চান নি, বলেন – ওনার দায়িত্ব যাত্রীদের সুরক্ষা। নিরীহ যাত্রীদের বিপদের মুখে ফেলে তিনি যেতে চান না, যাত্রীদের যা হবে উনি শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের সঙ্গে থাকতে চান।
ফ্রেঞ্চ ক্যাপ্টেনের এই সাহসিকতার জন্যে পরে ফ্রেঞ্চ সরকার তাঁকে ফ্রান্সের সম্মান National Order of the Legion of Honour এ ভূষিত করে। ইস্রায়েল সরকারও ক্যাপ্টেন ও তাঁর সহকারিদের সম্মান জানায়।
উগান্ডার Entebbe থেকে ইস্রায়েলের দূরত্ব প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার। ইস্রায়েল সরকার কিছুতেই সন্ত্রাসবাদিদের সঙ্গে আপস করতে চায় না, কিন্তু প্রায় একশো জন ইস্রায়েলি hostage হয়ে আছে। ইস্রায়েলের আর্মি ‘Operation Thunderbolt’ নামে প্রচণ্ড বিপজ্জনক ও অসম্ভব এক প্রোজেক্ট তৈরি করে। speed, silence and complete surprise ছিল এই প্রোজেক্টের মূল মন্ত্র। সন্ত্রাসবাদীরা যেটা ভাবতেও পারবে না যে উগান্ডার Entebbe তে ইস্রায়েল থেকে ইস্রায়েলি আর্মি এসে hostage দের বাঁচাবে, কারণ চারিদিক থেকে উগান্ডার সেনা পাহারা দিচ্ছে। হাজার মাইল দূরে এক দল কম্যান্ডো নিজের দেশবাসীকে জীবন্ত ফিরিয়ে আনার কঠিন প্রতিজ্ঞায় Operation Thunderbolt এর জন্যে তৈরি হতে শুরু করে দেয়।
রাতের অন্ধকারে একদল কম্যান্ডোকে আড়াই হাজার মাইল উড়িয়ে নিয়ে ইদি আমীনের সেনা ও সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে hostage দের বাঁচিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পরিকল্পনা যে কতটা অবাস্তব ও অসম্ভব ছিল, এবং সেই অসম্ভবতাকে অতিক্রম করে সম্ভব করার প্রতিজ্ঞা, প্রচেষ্টা, সাহসিকতা, দৃঢ়তা ও সফলতার বাস্তব কাহিনী এই সিনেমা।
apnar ei post-ta pore ‘Raid on Entebbe (1976)’ cinema-ta dekhlam …………..
Achha… kemon laglo?
besh bhalo laglo ……..