উচ্চমাধ্যমিকের পরে বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় সমস্ত ছাত্র ছাত্রীদের উদ্যেশ্য বা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ আই আই টি টে পড়ার সুযোগ। আই আই টি টে সুযোগ পেতে ছাত্র ছাত্রীরা সমস্ত শক্তি ঢেলে দেয়। চারিদিকে মাশরুমের মতো আই আই টি টে কোচিং সেন্টার খুলে গেছে, প্রচুর অর্থের বিনিময়ে কোচিং চলে। কিন্তু সেই সমস্ত কোচিং সেন্টারের সাফল্যের হার কি যথেষ্ট?
অর্থের বিনিময়ে যখন পড়াশোনা, গরীব মেধাবী ছাত্র ছাত্রি যায় কোথায়? নিশ্চয় কোন দোকানে কাজ করবে বা চা বিক্রি করবে কিংবা কাগজ ফেরী করবে। সেই খাতেই গরীবের জীবন চলে- সেটাই ‘আমার মহান’ দেশ এর নিয়ম। কিন্তু, আনন্দ কুমার সেই নিয়ম মানেন না। গরীব মেধাবী ছাত্রদের গলি থেকে রাজপথে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছেন তিনি ২০০২ সাল থেকে।
নিজে তিনি অঙ্কে তুখোড়, খুব অল্প বয়সেই তিনি অঙ্কের বিভিন্ন ম্যাগাজিনে পেপার ছাপিয়েছেন। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তিনি। কেম্ব্রিজে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে যেতে পারেন নি। কিন্তু, নিজের জীবনের সেই না পারার আক্ষেপের প্রকাশ পায় এই Super 30 তে। প্রতি বছর ত্রিশ জন গরীব অথচ মেধাবী ছাত্রকে বেছে নিয়ে আই আই টির এন্ট্রান্স পরীক্ষার কোচিং দেন তিনি ও তার ব্যাবস্থা। এই কোচিং চলাকালীন ছাত্রদের এক টাকা দিতে হয় না, থাকা খাওয়া সমস্ত ফ্রি। আনন্দ স্যারের মা ছাত্রদের জন্যে রান্না করতেন।
শুরুর দিকে অর্থের অভাব হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু আনন্দ স্যারের ছাত্রদের সাফল্যের হার একশো শতাংশ। কি করে সম্ভব? কি এই সাফল্যের ফর্মুলা?
বিহারের এই সুপারম্যান আনন্দ স্যারের প্রতি বছরের ‘সুপার থার্টি’ ছাত্র আনন্দ স্যারকে দেশে বিদেশে প্রচুর সম্মান এনে দিয়েছে। দেশ-বিদেশের বড় বড় টেলিভিশন চ্যানাল Discovery Channel, BBC প্রোগ্রাম বানিয়েছে। নানান বড় বড় পত্রিকা আনন্দ স্যারের এই অভূতপূর্ব মেধাবী মানুষ তৈরির গল্প লিখেছে। ইউরোপের ফোকাস ম্যাগাজিন আনন্দ স্যারকে ‘as one of the global personalities who have the ability to shape exceptionally talented people’ খ্যাতি দিয়েছে। একমাত্র ভারতীয় আনন্দ স্যার এই লিস্টে আছেন।
গরীব ছাত্রদের কাছে ‘আনন্দ স্যার’ এক আশার নাম, এক স্বপ্নের নাম। আজ আনন্দ স্যারের ‘সুপার থার্টি’র ছাত্ররা দেশে বিদেশের বড় বড় কোম্পানিতে উঁচু পদে আছে। মানুষই পারে ‘মানুষ’ তৈরি করতে।