ভ্রমণ সঙ্গী (What to pack)

কোথাও যাওয়ার আগে সঙ্গে কি কি নেব, নেব না – সে নিয়ে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই মনে মনে এক লিস্ট করতে শুরু করে দি। হাতের কাছে টুকরো কাগজে টুকিটাকি লিখেও ফেলি – লিস্ট তৈরি করি, আবার সে লিস্ট হারিয়েও ফেলি। তাই ভাবলাম এক সম্পূর্ণ লিস্ট তৈরি করে ফেলি। আর সর্বদাই চেষ্টা করি যতটা সম্ভব কম লাগেজ হয় – ভালো। কিন্তু, মাঝে মাঝে সেই নিয়ম মেনে চলতে পারি না।

বলা বাহুল্য কোথাও যেতে গেলে – বাস, ট্রেন, বা প্লেনের টিকিট তো নিতেই হয়। সঙ্গে থাকে পরিচয় পত্র, দরকারি টেলিফোন নম্বরের এক লিস্ট – কারণ, আজকাল মোবাইল ফোনের দরুন, অতি কাছের মানুষের ফোন নম্বরও অনেকসময় আমাদের মনে থাকে না। তাই, আমি একটা ছোট কাগজে কয়েকটা ফোন নম্বর লিখে, পার্সের কোণে রেখে দিই। মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলেও যাতে যোগাযোগ বজায় রাখা যায়। তাছাড়া, যে হোটেলে গিয়ে থাকবো সেই হোটেলের ফোন নম্বর, ঠিকানা, ও ম্যাপ নিতে হয়।

তাছাড়া, বিদেশে ভ্রমণে গেলে পাসপোর্ট, ভিসা, টাকা পয়সা, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল, চার্জার, ক্যামেরা ইত্যাদি তো অতি সযত্নে নিতেই হয়।

তারপর – আসে জামা কাপড়। যে সময়ে বেড়াতে যাওয়া হয় – সেই সময়ের আবহাওয়ার উপরে নির্ভর করে জামাকাপড় গুছিয়ে নি। এক সেট জামা কাপড় অতি অবশ্যই হাত ব্যাগে রাখি – কারণ ফ্লাইটে একবার আমাদের লাগেজ পৌঁছতে একদিন দেরী করেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নিয়ে, দরকারি জিনিস পত্র হাত ব্যাগেই রাখি।

আর – টুথপেস্ট, ব্রাশ, চিরুনি, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, ক্রিম, সানস্ক্রিন, টুকিটাকি ওষুধ পত্র ইত্যাদির এক ব্যাগ তো থাকেই। ঐ জিনিস গুলোকে সাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখলে ভালো হয়। অনেক সময় এয়ারপোর্টে ব্যাগ খুলে দেখাতে হলে – বাইরে থেকেই বোঝা যায়, ভেতরে কি কি আছে।

সামারে কোথাও গেলে, টুপি ও রোদ চশমা তো নিতেই হয়।

আর অতি অবশ্যই, একজোড়া ভালো আরামদায়ক জুতো নিতে হয় – যা পড়ে প্রচুর হাঁটাহাঁটি করা যায়। অতি অবশ্যই, সঙ্গে সব সময় এক ব্যাথা কমানোর বাম্‌ রাখা দরকার – কারণ, সারাদিন হাঁটাহাঁটি করে রাতে পায়ে ব্যাথা কমানোর বাম্‌ লাগিয়ে শুয়ে পড়লে, পরের দিন সকাল এক্কেবারে তরতাজা ভাবে শুরু হয়। নতুন দিনের ঘোরাঘুরির নতুন উদ্যম থাকে।

এ তো গেল এক সাধারণ প্যাকিঙ – এয়ার ট্র্যাভেলের প্যাকিং এর কথা।

তারপর, আসে বিশেষ প্যাকিং। যেমন, সেবার ক্যাম্পিংএ যাওয়ার সময়ে ছুরি, কাঁচি, টর্চ, ক্যাম্পিং লাইট নিতে হয়েছিল। অবশ্য, টর্চ টা আমি সঙ্গে রাখি।

অনেকে বলে ইউরোপে টর্চের কি দরকার? কিন্তু, সেবার ক্রোয়েশিয়ার প্লিট ভিস লেকে যাওয়ার সময়ে, গভীর জঙ্গলে, রাস্তার পাশে, সন্ধ্যার পরে যখন বাসটি আমাদের নামিয়ে দিয়েছিল – সেই জঙ্গলের পথে, নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ঐ ছোট টর্চের নীলাভ আলোই আমাদের পথ দেখিয়েছিল।

আরে হ্যাঁ – জায়গা বিশেষে মশার ওষুধ, যেমন অডোমস জাতীয় ক্রিম, বা স্প্রে অতি অবশ্যই নেওয়া দরকার। সেবার, কোলকাতা এয়ারপোর্টে সারারাত বসে কানেক্টিং ফ্লাইটের অপেক্ষা করতে হয়েছিল, কিছুক্ষণ বসার পরেই মনে হল – ফ্লাইটের আর দরকার নেই, মশারা মিলেই হয়তো আমার গন্ত্যব্যে পৌঁছে দেবে।

যাইহোক, বেড়াতে গেলে সর্বদাই মনে হয় – এটা, ওটা, সেটা নিতে হবে, আর লাগেজ বড় হতে শুরু করে দেয়। কিন্তু, এটা মনে রাখতে হবে – আমরা চাঁদে যাচ্ছি না। কাগজ পত্র, টিকিট, টাকা পয়সা ইত্যাদি সামলে নিয়ে, বাকি যদি কিছু ভুলে গিয়েও থাকি, ক্ষতি নেই।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Travel, Uncategorized and tagged , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান