ইউরোপের সন্ধ্যেবাতির রূপ (Street Light of Europe)

প্রতি সন্ধ্যায় ইউরোপের ঐতিহাসিক গলিপথ, রাজপথ ও প্রাচীন প্রাসাদের চত্বর গুলোয় যে হলুদ বাতি গুলো জ্বলে ওঠে – হলুদ আলোর আভায় ইউরোপের গলি পথ গুলোকে যেন তারা আরও রহস্যময়, আরও ঐতিহাসিক, আরও রোম্যান্টিক, আরও সুন্দর করে অপরূপ আলো ছায়াময় এক  রূপকথা নগরী করে তোলে। যে নগরী একটি অপূর্ব ছবি তৈরি করতে ভালোবাসে।

প্রতি সন্ধ্যা ও রাতের কালো অন্ধকার দূর করার মত অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া যে ঐ বাতি গুলোর অন্য কোনও কাজ থাকতে পারে, কিংবা ঐ বাতি গুলোর যে নিজস্ব এক সৌন্দর্য থাকতে পারে, থাকতে পারে আবেদন –  তা আমরা ইউরোপে আসার আগে কখনো ভাবতে পারি নি।

রাস্তার ধারের এক সাধারণ ল্যাম্পপোস্টের আর কিই বা কাজ থাকতে পারে? কিন্তু, ইউরোপকে কিংবা ইউরোপের অনেক অংশকে সুক্ষ সৌন্দর্যের ভূমি বললেও বোধহয় ভুল বলা হবে না। অতি সাধারণ এক ছোট জিনিসকে কি ভাবে অতি অসাধারণ, অতি শৈল্পিক করে তোলা যায়, সেই সাধারণে সৌন্দর্য যোগ করে দেওয়া যায় – তা বোধহয় এই ল্যাম্পপোস্ট গুলোকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।

সন্ধ্যেয় আলো দিয়ে পথ আলোকিত করা যেমন ওদের প্রতিদিনের কাজ, তেমনি দিনে, ইউরোপের পথের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করাও ওদের কাজ।

ফ্রান্সের কোন কোন গ্রামে গিয়ে কিংবা ইউরোপের অন্য কোন শহরে গিয়ে অবাক বিস্ময়ে সেই ল্যাম্প পোস্ট গুলোর সৌন্দর্য দেখতে তাই দ্বিধা করি নি। কিংবা, কখনো এমনিতেই ঐ এন্টিক ল্যাম্পপোস্ট গুলোর দিকে চোখ চলে গেছে। ইউরোপের ঐতিহাসিক শহরের প্রেক্ষাপটে, মরশুমি ফুলের নানান মোহময়ী রঙ্গে সাজানো ল্যাম্পপোস্ট গুলো যেন দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যে মুখিয়ে থাকে।

মধ্য যুগে যখন ইউরোপের পথে গ্যাস লাইটের প্রচলন ছিল, ল্যাম্প পোস্ট গুলোর আদল আজও তেমনি আছে – কিন্তু, উনিশ শতাব্দীর শুরুর দিকে সেই ল্যাম্পপোস্ট গুলোর আধুনিকীকরণ হয়েছিল। তারপর এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল ইলেকট্রিক লাইটের আধুনিকতা। লাইটের খাঁচা গুলোতে যোগ হয়েছে – ইলেকট্রিক বাল্ব – যারা হলুদ আলো ছড়ায়।

দেখেছি, ইউরোপের ঐতিহাসিক গলির সেই ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোর মধ্যে অদ্ভুত এক নস্টালজিয়া জড়িয়ে থাকে, থাকে অনেক রহস্য। সময় যতই বদলে যাক না কেন, এক একটি ল্যাম্পপোস্ট যেন নিজের কাছে অতীতের অনেক গল্প জড়ো করে রেখেছে, সন্ধ্যে হলেই যে গল্পরা সব আলো হয়ে যায়, হয়ে যায় রূপকথা।

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Travel, Uncategorized and tagged , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s