মাদ্রিদের রাজপ্রাসাদে (Royal Palace of Madrid, Spain)

মাদ্রিদের Ópera station এ নেমে, একটু হাঁটলেই রাজপ্রাসাদের উপস্থিতি অনুভব করে নেওয়া যায় – কারণ সব টুরিস্ট সেই দিক লক্ষ্য করেই হাঁটে। আর জুলাইয়ের সেই বিকেলে, আকাশ জুড়ে ধূসর কালো মেঘের সাজ, কখনো কখনো বা ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও একদল জাপানি টুরিস্টের কলকাকলিতে ভরপুর ছিল মাদ্রিদের বিখ্যাত স্প্যানিশ রাজপ্রাসাদের প্রাঙ্গণ।

পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর ও বিশাল এই স্প্যানিশ রাজপ্রাসাদ, যুগ যুগ ধরে মাদ্রিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় টুরিস্ট গন্ত্যব্য, তাই এই রাজপ্রাসাদ প্রাঙ্গনে সারা বছর টুরিস্টের আসা যাওয়া লেগেই থাকে। মাদ্রিদের এই রয়্যাল প্যালেস তার সমস্ত সৌন্দর্য, কারুকাজ ও বিশালতা নিয়ে, ইউরোপের অন্যতম সুন্দর রাজপ্রাসাদের তালিকায় অনায়াসে জায়গা করে নিয়েছে।

সরকারী মতে, যদিও মাদ্রিদ শহরের এই বিশাল ও সুন্দর স্থাপত্যের নাম ‘রয়্যাল প্যালেস’ – স্পেনের রাজ পরিবারের বাসস্থান, কিন্তু এখন মাদ্রিদ শহরের যে কোন সরকারী উৎসব অনুষ্ঠানের ঠিকানা এই রাজপ্রাসাদ, আর অন্যান্য সময়ে টুরিস্টদের জন্যে খুলে দেওয়া হয়। কখনো কখনো স্থানীয় মানুষরা এই রাজপ্রাসাদকে Palacio de Oriente  ও বলে, কারণ Plaza de Oriente স্কোয়ারের খুব কাছেই এই রাজপ্রাসাদের অবস্থান।

যদিও, এই রাজপ্রাসাদ আঠারো শতাব্দীতে তৈরি হয়েছিল, কিন্তু, এই জায়গায় প্রাসাদের সুত্রপাত হয়েছিল সেই নবম শতাব্দীতে।

আঠারো শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, যখন ক্রিসমাস ইভের দিন এই জায়গায় অবস্থিত পুরনো দিনের মুরিশ প্রাসাদ বা Alcázar আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেই Alcázar এর জায়গায়, টানা সতেরো বছর ধরে এই রাজপ্রাসাদ তৈরির কাজ চলেছিল – তৈরি হয়েছিল আজকের এই রাজপ্রাসাদ, যা দেখতে আজও মানুষ এই প্রাসাদ প্রাঙ্গনে ভিড় করে।

আগুন যাতে রাজপ্রাসাদের আর কোন ক্ষতি করতে না পারে, সেই জন্যে, নতুন এই রাজপ্রাসাদ তৈরির প্রধান উপাদান ছিল পাথর, ইট, কাঁচ ও লোহা। আর এই রাজপ্রাসাদের মূল প্রেরণা ছিল ফ্রান্সের Palace of Versailles, তাই একটু লক্ষ্য করলে এই প্রাসাদের গায়ে গায়ে Versailles প্রাসাদের ছাপ বোঝা যায়।

আর, তাছাড়া দামী স্প্যানিশ মার্বেল, মেহগনি কাঠের বিশাল সদর দরজা, জানালা, দামী শিল্প সংগ্রহ সব নিয়ে এই রাজ প্রাসাদও ঐশ্বর্যের দিক দিয়ে ইউরোপের অন্য কোন প্রাসাদের চেয়ে কোন অংশেই কম যায় না। তারপর তো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজপ্রাসাদের শিল্প সংগ্রহ বেড়েছে, বদলেছে।

লক্ষ মানুষের আসা যাওয়ায় এই রাজ প্রাসাদের প্রাঙ্গন এক একটি সুন্দর মুহূর্তের জন্ম দিয়ে চলে – সে হাসিমুখে ক্যামেরা হাতে এগিয়ে আসা ফিলিপিন্সের মেয়েটিকে দেখে বুঝতে পারি। রয়্যাল প্যালেসের সঙ্গে একটা ফটো তুলে দিন, প্লিজ। ঐ একটি ম্যাজিক মুহূর্ত তৈরির জন্যেই বোধহয় মানুষের বেঁচে থাকা, আর সেই এক একটি মুহূর্তের নামই বোধহয় – জীবন।

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Southern-Europe, Spain, Travel and tagged , , , . Bookmark the permalink.

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s