কিন্তু, Campbell ই ছিলেন প্রথম বিজ্ঞানী, যিনি, বিশেষ পদ্ধতিতে সূর্যগ্রহনের ফোটো তুলতেন, যেখানে মতবিরোধের সম্ভাবনা কম ছিল, সঠিক গণনায় সাহায্য হোতো – জানা যেত, সূর্যগ্রহনের সময় সত্যি সত্যিই কি হয়।
Erwin তাই, Campbell কে পূর্ণ সূর্যগ্রহন পর্যবেক্ষণের জন্যে রাশিয়ায় নিমন্ত্রণ জানিয়ে লিখলেন – এই পর্যবেক্ষণে, হয়তো গ্রাভিটিকে যুক্ত করে আইনস্টাইনের নতুন রিলেটিভিটি থিয়োরি প্রমান করা যাবে, কিংবা, ভুল প্রমান হবে – তাই এই সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা খুবই জরুরি। Campbell ও দেখলেন এই পর্যবেক্ষণ তাঁর অবজারভেটরির জন্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, তিনি Erwin কে চিঠির উত্তর দিলেন – লিখলেন – এ এক ভীষণ জটিল বিষয়, প্রমান করা খুবই কঠিন – তবে আমি পর্যবেক্ষণ করবো ।
বার্লিনের এক নবীন উৎসাহী যুবক ও ক্যালিফোর্নিয়ার অবজারভেটরির ডিরেক্টরের মধ্যে এক অদ্ভুত সংযোগ তৈরি হল – এই সবই কিন্তু Erwin এর বসকে না জানিয়েই চলছিল।
যখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণের প্রস্তুতি চলছিল, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ও Walther Nernst – দুই বিখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী জুরিখে গিয়ে, আইনস্টাইনকে বার্লিনে – তাঁর জন্ম ভূমিতে ফিরে আসার জন্যে রাজি করিয়েছিলেন।
আইনস্টাইন সেই সময়, ১৯১৪ র শুরুর দিকে বার্লিন ইউনিভার্সিটিতে প্রোফেসর হিসাবে যোগ দিলেন ও Prussian Academy of Sciences এর সদস্য হলেন। ইউরোপিয়ান বিজ্ঞান দুনিয়ার সদস্য – সে ছিল এক বিশাল সম্মান জনক পদ। এদিকে তাঁর জেনারেল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি প্রমানের জন্যে পূর্ণ সূর্য গ্রহনের দিনটি ঘনিয়ে আসছিল।
প্রচুর যন্ত্রপাতি, চারটে অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্যামেরা ইত্যাদি নিয়ে Erwin ও Campbell এর দুই দল ট্রেনে চেপে বসলেন – উদ্দেশ্য রাশিয়ার Crimea । দীর্ঘ সেই ট্রেন যাত্রায় তাঁদের একটাই চিন্তা ছিল – পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা ও ফোটো তোলার জন্যে সেই সময়ে যাতে আবহাওয়া ভালো থাকে, আকাশ পরিষ্কার থাকে। ইউরোপে আবহাওয়া ভালো পাওয়া রীতিমত এক সৌভাগ্যের ব্যপার।
দু’জন, রাশিয়ার দুই জায়গা – Crimea ও Kiew এ ক্যাম্প করে ঐ বিশেষ দিনটির জন্যে যন্ত্রপাতি সাজাতে শুরু করলেন ও অপেক্ষা করতে লাগলেন।
এদিকে, যদিও একটা ভয়ানক গুজব ছড়াচ্ছিল – বিশ্ব যুদ্ধ লাগতে পারে, কিন্তু, ওরা দু’ জনেই পূর্ণ সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করাকে নিয়ে এতোই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, ঐ গুজবে একদম কানই দিলেন না।
একটা খবর – অষ্ট্রিয়ার আর্চ ডিউক Franz Ferdinand কে হত্যা করার খবর ছড়িয়ে যাওয়া মাত্র, বিশ্ব যুদ্ধ অবশেষে লেগেই গেল। জার্মানি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল।
আইনস্টাইন সেই সময় খুবই চিন্তিত ছিলেন, তাঁর কাছে ঐ দু’জনকে সাবধান করে দেওয়ার কোন উপায় ছিল না। রাশিয়ার গভীর জঙ্গলের ক্যাম্পের মধ্যে ঐ দু’জন তখন যন্ত্রপাতি, টেলিস্কোপ, অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্যামেরা ইত্যাদি সাজাতে ব্যস্ত – এই ভয়ানক খবর তখনো ওদের কাছে পৌঁছয় নি।
চলবে