মাঝ জুলাইয়ে লিসবন শহরের টুরিস্টের ভিড়, স্থানীয় মানুষের ব্যস্ততার মধ্যেও এক টুকরো শান্ত, নির্জন বিকেলের খোঁজ পেতে অনেকেই এই Carmo স্কোয়ারে আসে। পাহাড়ি শহর লিসবনের Santa Justa লিফট দিয়ে উপরে উঠে, কাছেই এই শান্ত, ছোট্ট খোলামেলা জায়গা।
লিসবনের বুকে ১৭৫৫র ভয়ানক ভূমিকম্পের প্রায় সমস্ত চিহ্ন লিসবনের মানুষ মুছে ফেললেও সেই ধ্বংস লীলার চিহ্ন আজও বয়ে চলেছে এই স্কোয়ারের পাশের Carmo গথিক চার্চটি – সেই ভূমিকম্পে চার্চের ধ্বংসাবশেষ আজও বর্তমান, এবং বর্তমানে এই ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ লিসবনের প্রত্নতাত্বিক যাদুঘর। তবে, সম্পূর্ণ প্রাচীন গথিক স্টাইলে তৈরি এই চার্চের সদর দরজাটি অক্ষত, যা কিনা এখন যাদুঘরে ঢোকার প্রধান দরজা।
তাগাস নদীর তীরের এই শহরের উপরে যখন শেষ বেলার রোদ সোনালি কমলা রঙের যাদু ছড়িয়ে দেয়, সামনে দূরের ক্যাসল পাহাড়ের প্রাসাদটিকে সাজায় এক সোনালি আভায় – তখন পাহাড়ের ছায়ায় এই স্কোয়ারের জনজীবনে চলে এক লঘু ছন্দ, শান্ত মেজাজ। এখানে শান্ত বিকেলে খোলা ক্যাফেটেরিয়ায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে নানান আন্তর্জাতিক আলোচনায় যেমন বাধা নেই, তেমনি এখানে একাগ্র শিল্পীর শিল্প সৃষ্টিতে মনোযোগও অবিচ্ছিন্ন।
এই শান্ত স্কোয়ারে বসে নানা ধরণের মানুষের জনজীবনের ছবি দেখে বিকেল গড়ায় নীলাভ সন্ধ্যার দিকে। জীবন যদি হয় হাজার টুকরো স্মৃতির ক্যানভাস, তাহলে, পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে Carmo স্কোয়ারের এক শান্ত বিকেলের ছবি আঁকা হয়ে যায় আমার স্মৃতির সেই ক্যানভাসে।