সাদা কেল্লার কথা (Fisherman’s Bastion, Budapest)

জুলাইয়ের উজ্জ্বল সোনালি সকালেই পৌঁছে গিয়েছিলাম বুদার ক্যাসল অঞ্চলে। দানিয়ুব ছুঁয়ে উঠে আসা হালকা মিষ্টি জলো বাতাস উড়িয়ে দিচ্ছিল আমাদের চুল। রোদের তাপ তখনও বাড়ে নি, সকাল শুরু হয়েছিল বুদা অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থাপত্য আবিষ্কারের নেশায়। বুদার ক্যাসল পাহাড়ে বাস থেকে নেমে শুরু করেছিলাম চলা, টুরিস্ট ইনফরমেশন অফিস তখনও খোলে নি।

বুদা আর পেস্ট এই দুই শহরের মাঝে বয়ে চলেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে দীর্ঘ নদী দানিয়ুব। দানিয়ুবের তীরে পাহাড়ের উপরে বুদার ক্যাসল অঞ্চলে এলে সাদা পাথরে তৈরি জেলেদের কেল্লা – Fisherman’s Bastion চোখে পড়তে বাধ্য। সকালের রোদ পড়ে ঝকঝক করে সাদা চূড়া, দেখে মনে হয় রূপকথার কেল্লা। এই জায়গা থেকে দেখা যায় উদার বিস্তৃত দানিয়ুব, পার্লামেন্ট হলের চূড়া, চেইন ব্রিজের ঝলক, পেস্ট শহর – তাই এই অঞ্চল টুরিস্টদের খুবই প্রিয়। ছুটির সকালে প্রচুর টুরিস্ট সমাগম হয়।

রাস্তা থেকে সাদা পাথরের ঘোরানো চওড়া সিঁড়ি উঠে গেছে সাদা ধীবর কেল্লার দিকে। মধ্য যুগে নাকি এই অঞ্চলে মাছের বাজার বসত। ১৯০৫ এ তৈরি সাদা পাথরের এই ধীবর কেল্লা মূলত বুদা অঞ্চলের এক অলংকার, বলা যায় বুদার ক্যাসল পাহাড়ের এক প্রতীক। নামেই কেল্লা, কিন্তু কেল্লার কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই – বরং খোলা মেলা মুক্ত ছাদ, বড় বড় সাজানো থাম, জানালা, তিনকোণা চূড়া। মূলত পেস্টের উদার দৃশ্য, দানিয়ুবকে এখান থেকে দেখার জন্যেই যেন পাহাড়ের বুকে এই স্থাপত্য তৈরি হয়েছিল।

ধীবর কেল্লার সাদা পাথরের সাতটা সাদা চূড়া হাঙ্গেরির সাত উপজাতির প্রতীক, যারা কিনা 896 এ বসতি স্থাপন করেছিল। নিও-গথিক ও neo-Romanesque স্থাপত্যের সমন্বয় এই Fisherman’s Bastion দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, পরে আবার মেরামত করা হয়। এখন ব্যস্ত দেশ বিদেশের টুরিস্ট সামলাতে।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Hungary, Travel and tagged , , , , , , , , , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান