গথেনবার্গের নদীটি (The Göta älv River, Gothenburg, Sweden)

পৃথিবীতে এই পথে আমার চলার বহু বহু আগে নদী বয়ে চলেছিল, আজও বয়ে যায়, কালও বয়ে যাবে, অনন্ত কাল বয়ে যাবে।

সুইডেনের গথনেবার্গ শহরটিকে ছুঁয়ে, দুই ভাগে ভাগ করে দিয়ে যে নদীটি বয়ে চলেছে, সেই নদীটির নাম – Göta älv কিংবা ছোট করে গোটা। প্রথমে নদীর নামটি শুনে বেশ অদ্ভুতই লেগেছিল।

যাইহোক, গোটা নামের নদীটিকে সঙ্গে নিয়ে, নদীটিকে দেখে আমাদের গথেনবার্গ দর্শন শুরু হয়েছিল।

সুইডেনের বৃহত্তম লেক Vänern    থেকে উৎপন্ন এই গোটা নদী শহর ছুঁয়ে, ঐতিহাসিক স্থাপত্যের গা ঘেঁসে, আধুনিক গথেনবার্গ শহরের ইন্ডাস্ট্রিকে জল দিতে দিতে যেখানে গিয়ে নদীটির বিস্তারিত হয়েছে, গথেনবার্গ শহরকে আরও চওড়া ভাবে ভাগ করেছে, সেখানে নদীটির দুই তীরকে Älvsborg সেতু জুড়ে দিয়েছে। গোটা নদীর দৈর্ঘ্য ৯৩ কিলোমিটার।

তবে, ইউরোপের Klarälven লেক Vänern    এ এসে মিলেছে। এবং, সাধারণত,  Klarälven ও Göta älv এই দুই নদী মিলে এক নদী সিস্টেম তৈরি করেছে – আর এই দুই নদীর দৈর্ঘ্য এক সঙ্গে গণনা করলে এই নদী নর্ডিক দেশ গুলোর মধ্যে বৃহত্তম নদী।

 নদী গড়ে তুলেছিল মানুষের বসতি, শহর। আর প্রত্যেকটি মানুষের নিয়তিকে নদী নিজের বাঁধনে বেঁধে নিয়েছিল। নিজের প্রতিটি বাঁকের সঙ্গে সেই অগুনতি মানুষ গুলোর জীবনকে জুড়ে নিয়েছিল। আর সেই শুভক্ষণেই হয়তো সেই নদী আমাদের নিয়তিকেও বেঁধে নিয়েছিল।

তাই, হয়তো আমাদের এই পথে চলার কথা বহু আগেই কোন এক অদৃশ্য খাতায় লেখা হয়ে গিয়েছিল। মানুষের নিয়তিকে নদী লিখে চলে। জীবনের বহু সমস্যার সমাধান খুঁজতে, শান্তি খুঁজতে হলে, জীবন শিখতে হলে মানুষকে  নদীর কাছে যেতে হয় – বার বার যেতে হয়।

নাঃ, এ পথ আমার নয়, ভুল পথে চলে এসেছি – মানুষ সে কথা ভাবতে পারে, কিন্তু, নদী কখনোই তা ভাবতে পারে না। নদীর নিয়তি যে ধারায় চলে, নদীকে সেই ধারাতেই চলতে হয়, আবার কখনো নদীরও গতিপথ বদলায়, যেমন বদলায় জীবনের গতিপথ।

কিন্তু, জীবন বা নদী – দুইই শেখায়, সর্বদাই সামনের পথটি ধরে এগিয়ে যেতে হয়, যে পথ পেছনে রয়ে গেছে সেই পথে আর কখনোই চলা যায় না।  জীবন হয়তো সেই ভুল করতে পারে কিন্তু নদী কখনোই সেই ভুল করে না- তাই নদী মানুষকে জীবন শেখায়।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Europe, Northern-Europe, Sweden, Travel and tagged , , , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান