বাহুবলী, বাহুবলী

নাঃ, আর পারা গেল না। দেখে ফেলতেই হল। শুরুটা করতে হল – বাহুবলি দ্যা বিগিনিং থেকে। মে মাসের দুর্দান্ত গরমের তাপমাত্রার পারদ যেমনি চরচর করে উপরের দিকে চলেছে, তেমনি সারা দেশ যখন বাহুবলী জরে আক্রান্ত হয়েছে, ছোঁয়াচ তো লাগবেই।

তাছাড়া, যে ভাবে শহরের চারিদিকে বাহুবলির বড় বড় কাট আউট, প্রায় তিন তলা সমান উঁচু কাট আউট গুলো দেখা যাচ্ছে, চারিদিকে বাহুবলির জয়জয়াকার শোণা যাচ্ছে, ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলি কি করে।   সত্যি বলতে কি – বাহুবলি দেখে আমার চোখে যেন ছেলেবেলার ‘চাঁদমামা’ পত্রিকার গল্পের চেহারা গুলো জীবন্ত হয়ে উঠল।

সিনেমাটি চলাকালীন, মুহূর্তে মুহূর্তে নাটকীয় দৃশ্যের মোড়, বাহুবলির বীরত্ব, যুদ্ধের দৃশ্য – সবই যেন মস্তিষ্ককে অবশ করে দেয়। সিনেমাটি দেখে যুক্তি তর্কের ধার না ঘেঁসে, কেন কাত্তাপ্পা বাহুবলিকে মারল, প্র্যত্যেকটি দৃশ্যের সামঞ্জ্যস্য, ঘটনা গুলো একের পর এক কি করে হলো ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা না করে, শুধু মুগ্ধ হয়ে যেতে হয় – দৃশ্য গুলোকে শুধু দেখে যেতে হয়, গল্প শুনে যেতে হয়। স্কেল ও কল্পনার অনুভুতি নিতে হয়, আর পর্দায় হিরোইজমকে শুধু দেখে যেতে হয়।

আর, সিনেমা শেষে বাহুবলির শক্তি প্রদর্শনের দৃশ্য গুলো – যেমন, বিশাল এক শিবলিঙ্গ কাঁধে নিয়ে ঝর্ণার মধ্যে দিয়ে হাঁটা, ঝর্ণার গা বেয়ে ওপরে ওঠার দৃশ্য, আকাশের দিকে তির ছুঁড়ে দেওয়ার দৃশ্য – সবই মনে গেঁথে নিতে হয়।  আর বাহুবলির ভক্ত হয়ে যেতে হয়। ভারতবর্ষের কোন সিনেমাই বোধহয় পর্দায় এই স্কেলে এই ভাবে ফ্যান্টাসি তৈরি করতে পারে নি। বাহুবলির প্রতিটি পদক্ষেপে যেন রূপকথারা পর্দায় রূপ পেয়েছে।

আর Baahubali 2: The Conclusion, এই সিনেমাকে ভারতীয় সিনেমার কল্পনা শক্তির এক নতুন বেঞ্চ মার্ক বলা যায়। অবশ্য শুধু কল্পনা শক্তি নয়, বক্স অফিস কালেকশনেও এই সিনেমা এক নতুন বেঞ্চমার্ক তৈরি করে দিয়েছে। এই সিনেমাটি বোধহয় ভারতবর্ষের একমাত্র সিনেমা, সারা ভারতবর্ষকে এক করে দিয়েছে, পূর্ব ভারত থেকে শুরু করে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিন – সারা ভারতবর্ষ একই সঙ্গে সিনেমাটি দেখছে, আর তাছাড়া, ভারতবর্ষের হিন্দি সিনেমার এক নতুন মুখ, যা দেখতে একটু স্বস্তি বোধও হয়েছে।

দৃশ্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই সিনেমা বোধহয় এক ইতিহাস রচনা করে দিয়েছে। স্কেল, ডেডিকেশন, কল্পনা, গ্রাফিকস দৃশ্যের অভিনবত্ব – সব কিছুর দিক দিয়েই এই সিনেমা ভারতবর্ষের সিনেমা জগতের এক মাইলস্টোন বলা যায়। শোনা যায়, এই সিনেমায় বাহুবলির চরিত্রকে রূপ দিতে নায়ক প্রভাস পাঁচ বছর অন্য কোন সিনেমায় কাজ করে নি। আর প্রভাসের সেই দীর্ঘ পরিশ্রম এই সিনেমায় স্পষ্ট দেখা যায়।

অজানা's avatar

About abakprithibi

I see skies of blue and clouds of white, The bright blessed day, the dark sacred night And I think to myself what a wonderful world...........
This entry was posted in Movie time -:) and tagged , . Bookmark the permalink.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান