ঐতিহাসিক জাগ্রেব শহরের নির্জন ও একটু অবহেলিত এক দিকে, যে এক ঝলক প্যারিসের খোঁজ পাওয়া যায় – তা জাগ্রেবে আসা অনেক টুরিস্টকেই আশ্চর্য করে। জাগ্রেবের স্থানীয় আর্টিস্ট ও তাঁদের হাতে আঁকা শিল্পের ঠিকানা এই জায়গা – অবশ্য শুধু যে আর্ট ও আর্টিস্টের ঠিকানা তা নয় – এই জায়গা প্রচুর ছোট ক্যাফে ও ছোট রেস্টুরেন্ট, আর্ট ও ক্র্যাফট স্টল ইত্যাদি নিয়ে পরিষ্কার পরিছন্ন ভাবে সাজানো এক টুরিস্ট কেন্দ্রিক জায়গাও বলা যায়। কিন্তু, এখানে এসে দেখা যায় – অদ্ভুত ভাবে নির্জন ও সবুজ এই জায়গায় টুরিস্টের আনাগোনা একটু কমের দিকেই।
আপার জাগ্রেবের পাহাড়ি ঢালে তৈরি এই জায়গায় প্রচুর চেস্ট নাট গাছ দিয়ে সাজানো দীর্ঘ এক রাস্তা, যার নাম Strossmartre প্রমেনাদ। সম্ভবত জাগ্রেব শহরের সবচেয়ে রোম্যান্টিক ও সুন্দর জায়গার মধ্যে অন্যতম এই Strossmartre প্রমেনাদ। আর আর নিজস্ব সৌন্দর্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঐতিহাসিক জাগ্রেবের দৃশ্য।
গরমের সময়ে এই জায়গা নাকি – আর্টিস্টের রং তুলি, আর্টিস্ট, তাঁদের আঁকা অপূর্ব রঙিন ক্যানভাস, মিউজিক, ওপেন এয়ার সিনেমা, কফির কাপ, বিয়ার, ওয়াইনের গ্লাস – সব নিয়ে জাগ্রেব বাসীদের জন্যে এক নস্টালজিক পরিবেশ তৈরি করে – অনেকটা ঠিক, প্যারিসের সেই আর্টিস্ট পাড়ার মত পরিবেশ তৈরি হয়। আর সেই সময়ে জাগ্রেবে এলে টুরিস্টরা অতি অবশ্যই এই জায়গায় একবার আসে। অন্তত গত কয়েক বছর ধরে জাগ্রেবের এই জায়গা টুরিস্ট তালিকায় যুক্ত হয়ে গেছে।
জুলাইয়ের দুপুরে এই প্রমেনাদ ও তার দু’পাশের চেস্ট নাট গাছ গুলো আসন্ন পাতা ঝরানোর রঙে রঙিন হতে হতে এক মায়াবী সময়ের ছবি তৈরি করে চলে। চেস্ট নাট গাছ গুলো ঘন ছায়ায় ও পাতায় ঢেকে দেয় রাস্তা – সেই হলুদ সবুজ পাতা বিছানো পথ ধরে হাঁটা মানেও এক ধরণের মানসিক বিশ্রাম। শহর শেষে এমনি এক জায়গা, যে কোন শহরের মানুষের কাছে এক সবুজ অলংকার – যা নিয়ে ওরা গর্বিত হতে পারে, প্রান ভরে সবুজ নিঃশ্বাস নিতে পারে – ‘ভালো আছি’ বলতে পারে।