তুলুসে এসে রান্নার প্রতি এক আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, বৃষ্টি ভেজা জমাট শীতে রান্নাঘরের ওমের মধ্যে নানা ধরণের খাবার তৈরি এক অবসর বিনোদন, ছুটির দিনে জানাশোনা মানুষ নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো এক প্রথা বা আনন্দ। কেউ রান্নার প্রশংসা করলে অনেকেই নিজেকে এক বিশাল শেফ মনে করে, আমিও তাই মনে করি। বেশিক্ষণ কথা বললেই এক রেস্টুরেন্ট খোলার সুপ্ত বাসনা অনেকেই ব্যক্ত করে ফেলে, মাঝে মাঝে আমারও রেস্টুরেন্ট খোলার সুপ্ত বাসনা যে মাথাচাড়া দেয় নি তা নয়। তবে সেই ভাসা ভাসা চিন্তা খুব বেশী জমাট বাঁধার আগেই উড়ে পালায়।
পৃথিবীর সব দেশের মানুষেরই চিন্তার ধরণ বোধহয় একই। হেলসিঙ্কি এসে শুনি সাধারণ মানুষের রেস্টুরেন্ট খোলার সেই সুপ্ত বাসনাকে রূপ দিতে Restaurant Day পালন হয়, যদিও শুনেছি পৃথিবী জোড়া এই রেস্টুরেন্ট ডে পালন হয়, কিন্তু হেলসিঙ্কিতে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গেই এই দিন পালন হয়।
তথাকথিত রেস্টুরেন্টের খাবারে অরুচি? বিদেশে এসে সাধারণ মানুষের সাধারণ রান্না চাখার ইচ্ছে? তাঁদের জন্যে এই রেস্টুরেন্ট ডে এক খাদ্য খনি, খাদ্য মেলা। রেস্টুরেন্ট খোলার স্বপ্ন বিলাসিদের জন্যে এই রেস্টুরেন্ট ডে এক বাস্তবিক পরীক্ষা। সব কাজেই এক বাস্তবিক অভিজ্ঞতা দরকার, যদি সেই অভিজ্ঞতা খুব কম অর্থের বিনিময়ে পাওয়া যায় তবে আর ভয় কি। জয় মা – বলে ঝাঁপিয়ে পড়তে দোষ নেই।
হেলসিঙ্কির এই Restaurant Day তে যে কেউই নিজের রেস্টুরেন্ট খুলতে পারে। নিজের বাড়ীতে, অফিসে, পার্কে, বাগানে, সমুদ্রের ধারে – এমনকি বাচ্চারাও নিজেদের রেস্টুরেন্ট খুলে বসে সেদিন। রকমারি ফিনিশ রান্নার ক্ষুধা উদ্রেককারী গন্ধে হেলসিঙ্কি সেদিন ভরপুর থাকে। টুরিস্টদের ভীষণ পছন্দের এই Restaurant Day । শুধু বছরে একবার পালন করার পরিকল্পনা নিয়ে শুরু হয়েছিল কিন্তু অভূতপূর্ব সাড়া দেখে বছরে চারবার এই দিন পালন হয়।
অনেক বড় বড় শেফ নাকি এই রেস্টুরেন্ট ডে তেই তৈরি হয়েছিল। একদিনের জন্যে হলেও রেস্টুরেন্ট চালানোর সমস্ত হাল হকিকত, হ্যাপা জানা হয়ে যায় এই দিনে। বলা যায়, নিজের রেস্টুরেন্ট খোলার প্রথম ধাপ এই রেস্টুরেন্ট ডে। অনেকেরই নাকি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার শুরু এই রেস্টুরেন্ট ডে থেকেই। প্রাণবন্ত, রসালো জিভে জল আনা খাদ্য রসিকতা ও খাদ্য সংস্কৃতির এক নিদর্শন এই রেস্টুরেন্ট ডে। এই দিনে হেলসিঙ্কি বাসীরা নানা ধরণের খাবারের স্বাদে, গন্ধে, রসনার তৃপ্তিতে বিমুগ্ধ হয়।