“Anyone can cook, but only the fearless can be great.” – Chef Auguste Gusteau
Ratatouille সিনেমাটি এক উচ্চাভিলাষী ও রাঁধুনি ইঁদুরের গল্প। যার স্বপ্ন, এক দিন সে এক বিখ্যাত বাবুর্চি হবে। ইঁদুরটি যে কোন খাদ্যের খুব ভালো গন্ধ বিচার করতে পারে। ও টিভি দেখে দেখে বিখ্যাত এক ফ্রেঞ্চ রাঁধুনি Gusteau র সমস্ত রান্না শিখে নেয়। চুরি করে খাবার খেতে গিয়ে ফ্রান্সের এক ভদ্রমহিলার বন্দুকের গুলি থেকে কোন রকমে বেঁচে নালা নর্দমা দিয়ে সাঁতরাতে সাঁতরাতে শুকনো জায়গায় এসে নিজেকে প্যারিসে আবিষ্কার করে। এতদিন প্যারিসের নালা নর্দমায় থেকে ও জানতেই পারে নি যে এতদিন প্যারিসে ছিল।
Gusteau, যাকে টিভিতে দেখে রান্না শিখেছিল তার রেস্টুরেন্ট Gusteau র ঠিক উপরে ইঁদুরটি চলে যায়। এক খাদ্য সমালোচকের তীব্র সমালোচনায় Gusteau র হার্ট এট্যাক হয় ও মারা যায়। Gusteau র রেস্টুরেন্টের খুব বদনাম হয়ে যায় প্যারিসে, Gusteau র রেস্টুরেন্ট বদ মানুষের হাতে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু, ইঁদুরটি তা হতে দিতে চায় না।
মাঝে মাঝে আবার ইঁদুরটির হ্যালুসিনেশনও হয় – বিপদের সময় Gusteau কে দেখে ও কথা বলে। গল্প এগোয়, Gusteau র রেস্টুরেন্টের বিপন্নের সময়ে ইঁদুরটি কি ভাবে সাহায্য করে, Gusteau র ছেলে Linguini, কিন্তু একদম রান্না জানে না, তাঁকে কি ভাবে রান্নায় পারদর্শী করে তোলে ইঁদুরটি – সেই নিয়ে চমৎকার এক কমেডি সিনেমা এই – Ratatouille। এই সিনেমাটি বেস্ট অ্যানিমেটেড ছবি হিসাবে একাডেমী পুরস্কারও পায়।
ফ্রান্সে এসে প্রথম Ratatouille এর স্বাদ পেয়েছিলাম, এক ফ্রেঞ্চ বন্ধুর বাড়ীতে নিমন্ত্রণে প্রধান খাদ্যই ছিল Ratatouille আর হাঁসের মাংস। জুকিনি, বেগুন, ক্যাপ্সিকাম, পেঁয়াজ, টোম্যাটো এইসব নানান ধরণের তাজা সবজি দিয়ে তৈরি ফ্রান্সের এক জনপ্রিয় ও রঙিন খাদ্য এই – Ratatouille।
যাইহোক, ইঁদুরটি Ratatouille রান্না করে খাইয়ে Gusteau র রেস্টুরেন্টের খাদ্য সমালোচককে মুগ্ধ করে দেয়। সেই নিয়েই গল্প। সিনেমার গল্পটি শুধু যে খাদ্য কেন্দ্রিক তা নয়, এক নবীন প্রতিভা আবিষ্কারের গল্প, এক অসম বন্ধুত্বের গল্প। নবীন প্রতিভা, যে, কি আকারে, কি ভাবে সমাজের কোন স্তরে খুঁজে পাওয়া যায় – সেই অভাবনীয় ব্যাপার এই সিনেমার কেন্দ্র। সাধারণত পুরাতন প্রতিভা সহজে নতুন প্রতিভার জন্যে জায়গা ছাড়ে না কিন্তু প্রতিভা যখন আবিষ্কার হয় আলোর মতো ছড়িয়ে পড়ে। সে যে স্তরেই হোক না কেন – তখন পুরনো ও নতুন প্রতিভা সহাবস্থান করে।
তাছাড়া, কর্ম ও তার সমালোচনাও এই ছবির কেন্দ্র। যে কোন কর্মের সমালোচনা করা খুবই সহজ, অনেক সময় সমালোচক কর্মের সঠিক সমালোচনা করতে পারে না। কিন্তু, কর্মযোগীর তাতে কিছু যায় আসে না, কর্মযোগী ঠিকই লোকচক্ষুর আড়ালে নিজের কর্ম করে যায়। তখন সমালোচকদের সেই কর্মযোগীর কাছে নত হতে হয়। আবার, সমালোচকরাই ঝুঁকি নিয়ে পৃথিবীর কাছে নতুন প্রতিভাকে পরিচয় করায়। সিনেমার শেষে, প্রমান হয়ে যায় ইচ্ছে থাকলে যে কোন কাজ যে কেউই করতে পারে।
“Not everyone can become a great artist, but a great artist can come from anywhere.” – Food critic Anton Ego