ঐতিহাসিক রোমের কলোসিয়াম, ভ্যাটিক্যান সিটি, সেন্ট পিটারস বেসিলিকার ছাড়াও যে আরেক আশ্চর্য সুন্দর এক মনুমেন্ট আছে – তা রোম শহর কেন্দ্রের একটু বাইরে না গেলে হয়তো অজানাই থেকে যেতো।
হয়তো, রোমে আসা অনেক টুরিস্টই রোমের ঐতিহাসিক কেন্দ্রের বাইরে এই সুন্দর অথচ ঐতিহাসিক দিকের কথা জানেই না। অনেকেই তাই, রোম ঐতিহাসিক শহর কেন্দ্রের একটু বাইরে অবস্থিত Basilica Di San Giovanni দেখে একটু আশ্চর্যই হয়।
আমরাও San Giovanni ক্যাথিড্রালের সামনে পৌঁছে যথেষ্টই অবাক হয়েছিলাম, আরও আশ্চর্যান্বিত হয়েছিলাম – যখন জেনেছিলাম চোখের সামনের এই বিশাল ক্যাথিড্রাল, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো ক্যাথিড্রাল গুলোর মধ্যে অন্যতম, এবং রোমের ক্যাথিড্রালের তালিকায় ভ্যাটিক্যানের St Peter’s Basilica এরও আগে এই ক্যাথিড্রালের নাম থাকে। রোমের এই ক্যাথিড্রালের নাম নিয়ে একটু ধন্দ থাকতে পারে – কারণ রোমের মানুষ এই ক্যাথিড্রালকে বেশ কয়েক নামে জানে।
সাধারণত রোম শহরটির চারিদিকের ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও ক্যাথিড্রালের উপস্থিতি মানুষকে আরও বেশী করে ধাঁধায় ফেলে দেয়। পায়ে পায়ে প্রাচীন স্থাপত্য, কোনটা বেশী পুরনো, সে নিয়ে স্থাপত্য গুলোর মধ্যে যেন এক প্রতিযোগিতা চলে। আর সেই প্রতিযোগিতায় এই ক্যাথিড্রালের নাম প্রথমেই দেখা যায়।
চতুর্থ শতাব্দীতে, রোম সম্রাট কন্সটান্টাইন এই ক্যাথিড্রাল তৈরি করেছিল, চোদ্দ শতাব্দী পর্যন্ত এই ক্যাথিড্রাল রোমের পোপের প্রধান বাসস্থান ছিল। তারপর রোমের পোপের প্রধান বাসস্থান ভ্যাটিক্যানে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে এই ক্যাথিড্রাল রোমের বিশপের অফিসও বলা যায়।
শেষ এপ্রিলের সেই মাঝ দুপুরের উজ্জ্বল সোনালি রোদ গায়ে নিয়ে, দেখেছিলাম – নীল আকাশের প্রেক্ষাপটে, ক্যাথিড্রালের সাদা চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা পাথুরে মূর্তি গুলো যুগ যুগ ধরে আকাশ ছুঁয়ে ফেলার প্রচেষ্টা করে চলেছে। আর ক্যাথিড্রালের সামনের বিশাল চত্বরে লক্ষ কোটি হলুদ – সাদা ঘাস ফুলেরা বাতাসের সঙ্গে মাথা দোলাতে দোলাতে টুরিস্টদের স্বাগত সম্ভাষণ জানিয়ে চলেছিল। এপ্রিলের মৃদু ঠাণ্ডা ও উজ্জ্বল রোদ্দুর মিলে জমাটি এক ছুটির মেজাজ তৈরি করেছিল। আর সেই মেজাজের আভাস ক্যাথিড্রালের সামনের মানুষ গুলোর চোখে মুখেও ফুটে উঠছিল। তৈরি হয়েছিল ছুটির এক সুন্দর ছবি।