এই বালির পাহাড়ের বুকে অ্যাটল্যান্টিক সমুদ্রের হাওয়া যুগ যুগ ধরে বিলি কেটে বয়ে যায় আর সঙ্গে একটু একটু করে বালি নিয়ে এসে জমিয়ে জমিয়ে এই পাহাড়কে আরও আরও সমৃদ্ধ করে, আরও উঁচু করে, আয়তনে আরও বড় করে তোলে। প্রকৃতির বুকে আশ্চর্য এই সজীব পদ্ধতি কবে থেকে যে চলে এসেছে তাঁর হিসাব কে রাখে। মানুষ প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টির শুধুই প্রশংসা কিংবা ধ্বংস করতেই জানে।
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বড় বালির পাহাড় ফ্রান্সের এই ‘Dune du Pilat’। ফ্রান্সের La Teste-de-Buch অঞ্চলের এই বিখ্যাত বালির পাহাড় প্রতি বছর গরমের সময় প্রচুর টুরিস্ট আকর্ষণ করে। সাধারণত মরুভুমিতে বালির পাহাড় প্রতিনিয়ত তৈরি হয় কিন্তু এই ভাবে সমুদ্রের তীরে চারিদিকে সবুজের মধ্যে হঠাৎ এই ধরণের বালির পাহাড় তৈরি হওয়া, প্রকৃতির আজব খেয়ালই বলা যেতে পারে।
পাইন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে বালির পাহাড়ের দিকে। জঙ্গল পেড়িয়ে মিহি বালু দিয়ে তৈরি এই Dune du Pilat সামনে যখন পৌঁছলাম দুপর গড়িয়ে তখন সবে বিকেল শুরু। বালির পাহাড়ের একদম উপরে যাওয়ার সিঁড়ি ধরে উপরে উঠে অ্যাটল্যান্টিক ও তাঁকে ঘিরে এই অপূর্ব Dune এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পশ্চিমে দিগন্তের উপরে সূর্যের অস্ত যাওয়ার প্রস্তুতিতে নানা রঙের খেলায় সমুদ্র ও আকাশ দুইই মত্ত। পূর্বে যতদূর চোখ যায় ঘন সবুজ পাইন জঙ্গল। এক অপূর্ব ছবি।
এই Dune du Pilat নাকি প্রতিবছর আয়তনে বাড়ে। প্রতি বছর সামনের পাইন জঙ্গলের কিছু অংশ বালির পাহাড়ের নীচে চাপা পরে যায়। বহু বছর আগে এই Dune du Pilat র দক্ষিণ পূর্বে কয়েকটি বাংলো বাড়ী তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মাত্র দু বছরের মধ্যে এই Dune du Pilat বালি ঐ বাংলো গুলোকে সম্পূর্ণ বালির নীচে চাপা দিতে শুরু করে দেয়। মাত্র নয় বছরের মধ্যে ঐ বাড়ীর আর কোন অস্ত্বিত্ব থাকে না। এই Dune du Pilat র নীচে পাইন বনের মধ্যে অনেক ক্যাম্পিং লোকেশন আছে, পরিবেশবিদরা তথ্য দিয়েছেন যে, যদি আরও কুড়ি বছর এই Dune du Pilat বাড়তে থাকে পাইন বনের মধ্যে রাস্তা ও বনের কিছু অংশ সহ সম্পূর্ণ ক্যাম্পিং লোকেশন বালির নীচে চলে যাবে।
আটলান্টিকের সতেজ হওয়ায় আর মানুষের পায়ের ছাপে প্রতি মুহূর্তে এই বালু চরের নক্সা বদলে যাচ্ছে। অপূর্ব এই সময়ের রঙের খেলা, আলোর খেলা। এখানের আকাশ নীল আর সমুদ্র নীলের মাখামাখি অপরূপ, অনন্ত, অসীম।
paine jangoler sathe balir paharer lorai ………….khub interesting …………….. global warming-r kono bhumika ache ki?
hote pare. global warming-er hoyto kono probhab ache…